Pitara logo

তৃতীয় উপাখ্যান

বেতাল কহিল, মহারাজ!

বর্ধমান নগরে রূপসেন নামে অতি বিজ্ঞ, গুণগ্রাহী, দয়াশীল, পরম ধার্মিক রাজা ছিলেন। একদিন দক্ষিণদেশনিবাসী বীরবর নামে রজঃপূত, কর্মপ্রাপ্তির বাসনায় রাজদ্বারে উপস্থিত হইল। দ্বারবান তাহার প্রমুখাৎ সবিশেষ সমস্ত অবগত হইয়া, রাজসমীপে বিজ্ঞাপন করিল, মহারাজ! বীরবর নামে এক অস্ত্রধারী পুরুষ কর্মের প্রার্থনায় আসিয়া, দ্বারদেশে দণ্ডায়মান আছে; সাক্ষাৎকারে আসিয়া স্বীয় অভিপ্রায় আপনকার গোচর করিতে চায়; কি আজ্ঞা হয়। রাজা আজ্ঞা করিলেন, অবিলম্বে উহারে লইয়া আইস।

অনন্তর, দ্বারী বীরবরকে নরপতিগোচরে উপস্থিত করিলে, রাজা তদীয় আকার প্রকার দর্শনে তাহাকে বিলক্ষণ কার্যদক্ষ স্থির করিয়া, জিজ্ঞাসা করিলেন, বীরবর! কত বেতন পাইলে, তোমার সচ্ছন্দে দিনপাত হইতে পারে। বীরবর নিবেদন করিল, মহারাজ! প্রত্যহ সহস্র স্বর্ণমুদ্রার আদেশ হইলে আমার চলিতে পারে।

রাজা জিজ্ঞাসিলেন, তোমার পরিবার কত। সে কহিল, মহারাজ! এক স্ত্রী, এক পুত্র, এক কন্যা, আর স্বয়ং, এই চারি; এতদ্ব্যতিরিক্ত আর আমার পরিবার নাই। রাজা শুনিয়া মনে মনে বিবেচনা করিতে লাগিলেন, ইহার পরিবার এত অল্প, তথাপি কি নিমিত্ত এত অধিক প্রার্থনা করে। যাহা হউক, এক ভৃত্যের নিমিত্তে নিত্য নিত্য এবংবিধ ব্যয় যুক্তিসঙ্গত নহে। অথবা এ অর্থব্যয় ব্যর্থ হইবেক না; অবশ্যই ইহার অসাধারণ গুণ ও ক্ষমতা থাকিবেক। অতএব, কিছুদিনের নিমিত্তে রাখিয়া ইহার গুণের ও ক্ষমতার পরীক্ষা করা উচিত। অনস্তর, কোষাধ্যক্ষকে ডাকাইয়া রাজা আজ্ঞা দিলেন, তুমি প্রতিদিন প্রাতঃকালে, বীরবরকে সহস্র সুবর্ণ দিবে; কোনও মতে অন্যথা না হয়।

বীরবর রাজকীয় আজ্ঞা শ্রবণে পরম পরিতোষ প্রাপ্ত হইয়া, ধন্যবাদ প্রদান করিতে লাগিল এবং কোষাধ্যক্ষের নিকট হইতে সে দিবসের প্রাপ্য নির্ধারিত সুবর্ণ গ্রহণপূর্বক, নৃপনির্দিষ্ট বাসস্থানে গমন করিল। তথায় উপস্থিত হইয়া, সে প্রথমতঃ সেই সুবর্ণকে ভাগদ্বয়ে বিভক্ত করিয়া একভাগ বিপ্রসাৎ করিল; অবশিষ্ট ভাগ পুনর্বার দ্বিভাগ করিয়া, একভাগ বৈষ্ণব, বৈরাগী, সন্ন্যাসী প্রভৃতিকে দিল; অপর ভাগ দ্বারা নানাবিধ খাদ্যসামগ্রীর আয়োজন করিয়া শত শত দীন দুঃখীকে অনাথ প্রভৃতিকে পর্যাপ্ত ভোজন করাইল; অবশিষ্ট যৎকিঞ্চিং স্বয়ং পুত্র, কলত্র, ও দুহিতার সহিত আহার করিল। প্রতিদিন এইরূপে দিনপাত করিয়া স্বায়ংকালে বর্ম, খড়্গা ও চর্ম ধারণপূর্বক বীরবর সমস্ত রজনী রাজদ্বারে উপস্থিত থাকে। রাঙ্গা তাহার শক্তির ও প্রভুভক্তির পরীক্ষার্থে কি দ্বিতীয় প্রহর, কি তৃতীয় প্রহর, যখন যে আদেশ করেন, অতি দুঃসাধ্য হইলেও সে তৎক্ষণাৎ তাহা সম্পন্ন করিয়া আইসে।

একদিন নিশীথ সময়ে অকস্মাৎ স্ত্রীলোকের ক্রন্দনধ্বনি শ্রবণগোচর করিয়া, রাজা বীরবরকে আহ্বান করিলে, সে তৎক্ষণাৎ সম্মুখবর্তী হইয়া কহিল, মহাবাজ! কি আজ্ঞা হয় । রাজা কহিলেন, দক্ষিণ দিকে স্ত্রীলোকের ক্রন্দনশব্দ শুনা যাইতেছে, ত্বরায় ইহার তথ্যানুসন্ধান করিয়া আমায় সংবাদ দাও। বীরবর যে আজ্ঞা মহারাজ বলিয়া, তৎক্ষণাৎ প্রস্থান করিল। রাজা বীরবরকে এক মুহূর্তের নিমিত্তেও আজ্ঞা প্রতিপালনে পরার্থ না দেখিয়া সাতিশয় সন্তুষ্ট ছিলেন; এক্ষণে তাহার সাহস ও ক্ষমতা প্রত্যক্ষ করিবার নিমিত্ত স্বয়ং গুপ্তভাবে পশ্চাৎ পশ্চাৎ চলিলেন।

বীরবর সেই ক্রন্দনশব্দ লক্ষ্য করিয়া, অতি প্রসিদ্ধ এক ভয়ঙ্কর শ্মশানে উপস্থিত হইল; দেখিল, এক সর্বালঙ্কারভূষিতা সর্বাঙ্গসুন্দরী রমণী শিরে করাঘাত ও হাহাকার করিয়া উচ্চৈঃস্বরে রোদন করিতেছে। বীরবর দেখিয়া অতিশয় বিস্ময়াবিষ্ট হইল এবং তাহার সম্মুখবর্তী হইয়া জিজ্ঞাসিল, তুমি কে, কি দুঃখে এই ঘোর রজনীতে একাকিনী শ্মশানবাসিনী হইয়া বিলাপ ও পরিতাপ করিতেছ। সে কোনও উত্তর দিল না; বরং পূর্ব অপেক্ষায় অধিকতর রোদন করিতে লাগিল। অনন্তর বীরবর সবিশেষ ব্যগ্রতা প্রদর্শনপূর্বক, বারংবার জিজ্ঞাসা করাতে সে কহিল, আমি রাজলক্ষ্মী; রাজা রূপসেনের গৃহে নানা অন্যায়াচরণ হইতেছে ; তৎপ্রযুক্ত তদীয় আবাসে অচিরাৎ অলক্ষ্মীর প্রবেশ হইবেক; সুতরাং আমি রাজার অধিকার পরিত্যাগ করিয়া যাইব। আমি প্রস্থান করিলে অল্প দিনের মধ্যেই রাজার প্রাণাত্যয় ঘটিবেক; সেই দুঃখে দুঃখিত হইয়া রোদন করিতেছি।

প্রভুর এবস্তুত অসম্ভাবিত ভাবি অমঙ্গল শ্রবণে বিষাদসাগরে মগ্ন হইয়া, বীরবর কহিল, দেবি। আপনি যে আজ্ঞা করিলেন তাহাতে কোনও মতে সন্দেহ করিতে পারি না। কিন্তু, যদি এই হৃদয়বিদারণ অমঙ্গল ঘটনার নিবারণে কোনও উপায় থাকে বলুন; আমি রাজার মঙ্গলের নিমিত্ত প্রাণান্ত পর্যন্ত স্বীকার করিতে প্রস্তুত আছি। রাজলক্ষ্মী কহিলেন, পূর্বদিকে অর্ধযোজনান্তে এক দেবী আছেন। যদি কেহ ঐ দেবীর নিকটে আপনপুত্রকে স্বহস্তে বলিদান দেয়, তবে তিনি প্রসন্ন হইয়া রাজার সমস্ত অমঙ্গলের সম্পূর্ণ নিবারণ করিতে পারেন।

রাজলক্ষ্মীর এই বাক্য শুনিয়া, বীরবর অতিসত্বর ভবনাভিমুখে ধাবমান হইল । রাজাও কৌতুকাবিষ্ট হইয়া পশ্চাৎ পশ্চাৎ চলিলেন। বীরবর গৃহে উপস্থিত হইয়া আপন পত্নীকে জাগরিত করিয়া সবিশেষ সমস্ত জ্ঞাত করিলে, সে তৎক্ষণাৎ পুত্রের নিদ্রাভঙ্গ করিয়া কহিল, বৎস! তোমার মস্তক দিলে রাজার দীর্ঘ আয়ু ও অচল রাজ্য হয়। তখন পুত্র কহিল, মাতঃ! প্রথমতঃ, আপনকার আজ্ঞা; দ্বিতীয়তঃ, স্বামিকার্য; তৃতীয়তঃ, ক্ষণবিনশ্বর পাঞ্চভৌতিক দেহ দেবসেবায় নিয়োজিত হইবেক, ইহা অপেক্ষা আমার পক্ষে প্রাণত্যাগের উত্তম সময় আর ঘটিবেক না। অতএব শুভকর্মে বিলম্ব করা কর্তব্য নহে। আপনারা সত্ত্বর হইয়া কার্যসম্পাদন করুন।

বীরবর পুত্রের এতাদৃশ পরমাদ্ভূত বাক্য শ্রবণে বিস্ময়াপন্ন হইয়া, অশ্রুপূর্ণ নয়নে সহধর্মিণীকে কহিল, যদি তুমি সচ্ছন্দ মনে পুত্রপ্রদান কর, তবেই আমি দেবীর নিকটে বলিদান দিয়া রাজকার্য নিষ্পন্ন করি। স্বামিবাক্য শ্রবণগোচর করিয়া বীরশ্বরের পত্নী নিবেদন করিল, নাথ! ধর্মশাস্ত্রে নির্দিষ্ট আছে, স্বামী মূক, বধির, পঙ্গু, অন্ধ, কুব্জ, কুষ্ঠী যেরূপ হউন, তাঁহাকে সন্তুষ্ট রাখিতে পারিলে যেরূপ চরিতার্থতা লাভ হয়, শাস্ত্রবিহিত দান, ধ্যান, ব্রত, তপস্থা দ্বারা তদ্রূপ হয় না; আর যদি স্বামীর প্রতি অযত্ন ও অবজ্ঞা প্রদর্শন করিয়া পারলৌকিক সুখসম্ভোগের লোভে নিরস্তর শাস্ত্রবিহিত ধর্মকর্মের অনুষ্ঠান করে, সে সকল সর্বতোভাবে বিফল ও অন্তে অবধারিত অধোগতির কারণ হয়। অতএব আমার পুত্র পৌত্রের প্রয়োজন কি; তোমার চিত্তরঞ্জন ও চরণশুশ্রূষা করিলেই, উভয় লোকে নিস্তার পাইব। তাহার পুত্র কহিল, পিতঃ ! যে ব্যক্তি স্বামিকার্যসম্পাদনে সমর্থ তাহারই জন্ম সার্থক এবং সেই স্বর্গলোকে অনন্ত কাল মুখসম্ভোগ করে। অতএব আর কি জন্যে সংশয়ে কালহরণ করিতেছেন, কার্যসাধনে তৎপর হউন । বিলম্বে কার্যহানির সম্ভাবনা।

ইত্যাকার নানাপ্রকার কথোপকথনের পর, বীরবর সপরিবারে দেবীর মন্দিরাভিমুখে প্রস্থান করিল। রাজা এইরূপে বীরবরের, সপরিবারের প্রভুভক্তির প্রবলতা ও অচলতা দেখিয়া, যৎপরোনাস্তি চমৎকৃত ও আহ্লাদিত হইলেন এবং মনে মনে অগণ্য ধন্যবাদ প্রদানপূর্বক, গুপ্তভাবে তাহার পশ্চাৎ পশ্চাৎ চলিলেন । কিয়ৎক্ষণ পরে বীরবর দেবীর মন্দিরে উপস্থিত হইল এবং গন্ধ, পুষ্প, ধূপ, দীপ, নৈবে, আদি নানা উপাচারে যথাবিধি পূজা করিযা, সাষ্টাঙ্গ প্রণিপাত পূর্বক দেবীর সম্মুখে কৃতাঞ্জলি হইয়া কহিল, জগদীশ্বরি ! তোমাকে প্রসন্ন করিবার নিমিত্ত, আমি প্রাণাধিক প্রিয় পুত্রকে স্বহস্তে বলিদান দিতেছি। কৃপা কর, যেন প্রভুর দীর্ঘ আয়ুঃ ও অচল রাজ্য হয় ৷

এই বলিয়া খড়গ লইয়া, বীরবর অকাতরে পুত্রের মস্তক ছেদন করিল। বীরবরের কন্যা এইরূপে জীবিতাধিক সহোদরের প্রাণবিনাশ দেখিয়া খড়্গাপ্রহার দ্বারা প্রাণত্যাগ করিল। তাহার পত্নীও শোকে একান্ত বিকলচিত্তা হইয়া, তৎক্ষণাৎ তনয় তনয়ার অনুগামিনী হইল। তখন বীরবর বিবেচনা করিল, প্রভুকার্য সম্পন্ন করিলাম; এক্ষণে আর কি নিমিত্তে দাসত্বশৃঙ্খলে বদ্ধ থাকি; আর কি সুখেই বা জীবনধারণ করি; এই বলিয়া, সেই বিষম খঙ্গ দ্বারা স্বীয় শিরচ্ছেদন করিল।

এইরূপে, অল্পক্ষণ মধ্যে চারিজনের অদ্ভুত মরণ প্রত্যক্ষ করিয়া, রাজার অন্তঃকরণে নিরতিশয় নির্বেদ উপস্থিত হইল। তখন তিনি কহিতে লাগিলেন, যে রাজ্যের নিমিত্ত এতাদৃশ প্রভুভক্ত সেবকের সর্বনাশ হইল, আর আমি সেই বিষম বাজ্যের ভোগে প্রবৃত্ত হইব না। আমি অতিশয় স্বার্থপর ও নিরতিশয় নিৰ্বিবেক; নতুবা, কি নিমিত্তে বীরবরকে পুত্রহত্যা হইতে নিবৃত্ত করিলাম না; কি নিমিত্তেই বা তাহাকে আত্মঘাতী হইতে দিলাম, উপক্রমেই এই ঘোরতর অধ্যবসায় হইতে বীরবরকে বিরত করা, সর্বতোভাবে আমার উচিত ছিল। সর্বথা আমি অতি অসং কর্ম করিয়াছি। এক্ষণে আত্মহত্যারূপ প্রায়শ্চিত্ত ব্যতীত, চিত্তসন্তোষ জন্মিবেক না।

এই বলিয়া, খড়্গা লইয়া, রাজা আত্মশিরচ্ছেদনে উদ্যত হইবামাত্র, ভগবতী কাত্যায়নী, তৎক্ষণাৎ আবির্ভূতা হইয়া হস্তধারণপূর্বক রাজাকে মরণব্যবসায় হইতে নিবৃত্ত করিলেন, কহিলেন বংস! তোমার সাহস ও সদ্বিবেচনা দর্শনে, যার পর নাই, প্রীত হইয়াছি; অভিপ্রেত বর প্রার্থনা কর। রাজা কহিলেন, মাতঃ! যদি প্রসন্ন হইয়া থাক, এই চারিজনের জীবন দান কর; এক্ষণে ইহা অপেক্ষা আমার আর গুরুতর প্রার্থয়িতব্য নাই। দেবী তথাস্তু বলিয়া, অবিলম্বে পাতাল হইতে অম্লত আনয়নপূর্বক তাহাদের গাত্রে সেচন করিবা মাত্রে, চারিজনেই তৎক্ষণাৎ সুপ্তোত্থিতের ন্যায় গাত্রোখান করিল। রাজা যথার্থ প্রভুভক্ত বীরবরকে, অপত্য কলত্র সহিত, পুনর্জীবিত দেখিয়া, অপরিসীম হর্ষপ্রাপ্ত হইলেন, এবং নিরতিশয় ভক্তিযোগ সহকারে, দেবীর চরণারবিন্দে সাষ্টাঙ্গ প্রণিপাত করিয়া, কৃতাঞ্জলি হইয়া, গদগদ বাক্যে স্তব করিতে লাগিলেন। রাজার ভক্তিদর্শনে ও স্তবশ্রবণে পরম প্রীতিপ্রাপ্ত হইয়া দেবী প্রার্থনাধিক বরপ্রদান দ্বারা রাজাকে চরিতার্থ করিয়া, অন্তর্হিতা হইলেন।

পরদিন প্রভাত হইবামাত্র রাজা রূপসেন, সভাভবনে সিংহাসনে আসীন হইয়া রাত্রিরত্তাস্তকীর্তন পূর্বক সর্ব সভাজন সমক্ষে, ধর্ম সাক্ষী করিয়া, অদ্ভুত প্রভুপরায়ণ বীরবরকে অর্ধরাজ্যেশ্বর করিলেন ।

এইরূপে কথা সমাপ্ত করিয়া বেতাল জিজ্ঞাসা করিল, মহারাজ! পূর্বাপর সমস্ত শ্রবণ করিলে; এক্ষণে জিজ্ঞাসা করি, কাহার ঔদার্য অধিক হইল। বিক্রমাদিত্য উত্তর দিলেন, আমার বোধে রাজার ঔদার্য অধিক। বেতাল কহিল, কেন। রাজা কহিলেন, স্বামীর নিমিত্ত সর্বনাশস্বীকার ও প্রাণদান করা সেবকের কর্তব্য কর্ম। বীরবর রাজকার্যার্থে ঈদৃশ ঔদার্য প্রকাশ করিয়া আত্মধর্ম প্রতিপালন করিয়াছে। কিন্তু রাজা যে সেবকের নিমিত্ত, রাজ্যাধিকার তৃণতুল্য বোধ করিয়া, অনায়াসে প্রাণত্যাগে উদ্যত হইলেন, এতাদৃশ ঔদার্যের কার্য কস্মিন্ কালেও, কাহারও কর্ণগোচর হয় নাই।

ইহা শুনিয়া বেতাল ইত্যাদি ।

চতুর্থ উপাখ্যান